উপজেলা আওয়ামী লীগের কারণ দর্শানোর নোটিশ
শাহে আলমের এমপি নামে ১৭ অভিযোগ
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
১৬-১০-২০২৩ ০৬:২২:৪৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৬-১০-২০২৩ ০৬:২২:৪৩ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি :
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করানো, দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অর্থ আত্মসাত, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে ইটভাটা মালিক ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, ঠিকাদারী কাজে পার্সেন্টেজ আদায়, সরকারি খাল দল করে নিজ বাড়ির সিমানা প্রাচীর নির্মাণ ও সংখ্যালঘুর জমি দখল চেষ্টাসহ ১৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে কারণ দর্শানো নোটিশে।
উল্লেখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা নোটিশপ্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. গোলাম ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা গত ৩ অক্টোবর এই নোটিশে স্বাক্ষর করেন। আজ সোমবার ওই নোটিশের কপি গণমাধ্যমে দেয়া হয়।
নোটিশের অনুলিপি জেলা আওয়াম লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় নির্মাণের জন্য ২ লাখ টাকা আপনার কাছে গচ্ছিত আছে। যা বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও পরিশোধ করছেন না। উদাহরণ উল্লেখ করে উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বানারীপাড়া পৌরসভা এবং চাখার ও সৈয়দকাঠী ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করানোর অভিযোগ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপন চাচাতো ভাইকে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তাকে বিজয়ী করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শাহে আলম এমপি হওয়ার পর তার হাতুরি বাহিনী দলীয় কর্মী আতিক বাপ্পীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে তার ৪ হাত-পা ভেঙে দেয়। প্রায় ৬ মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়ার পর ফের মিথ্যা মামলা দিয়ে বাপ্পীকে স্ত্রী ও শিশু কন্যা সহ জেল খাটানোর অভিযোগ করা হয়েছে এমপি'র বিরুদ্ধে।
উপজেলা আওয়াম লীগ সদস্য ফাইয়াজুল হক রাজুকে (শের-ই বাংলা একে ফজলুল হকের দৌহিত্র) গত ২৩ ও ২৫ আগস্ট পৃথক দুটি শোকসভায় এমপির সামনে অপমান করে তার অনুসারী কর্মীরা। এতে দলীয় নেতাকর্মী সহ জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
এমপি ও তার চাচাতো ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের কেয়ারটেকারের কাছ থেকে চাবি নিয়ে দীর্ঘদিন কার্যালয়টি তালাবদ্ধ করে রাখেন। এতে দলীয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমপির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বানারীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি।
বানারীপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ ড. জ্যোতিময় গুহ ঠাকুরতার স্মৃতি বিজরিত বাড়ির শেষ সম্বল জোরপূর্বক মালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে দখল এবং তেতলা গ্রামে সংখ্যালঘু রতন ঘরামীর জমি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় নির্মাণের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনির হোসেনের কাছে জমা রাখা ৫৪ লাখ টাকা এমপি নিজের জিম্মায় নিয়ে পকেটস্থ করেন। বানারীপাড়া হাইস্কুলের অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানের নামে ২০টি ইটভাটা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে এমপির নামে চাঁদা উত্তোলন করা হয়।
বাকপুর ঈদগাহ উন্নয়নের নামেও প্রতিটি ইটভাটা থেকে ৪০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করা হয় এমপির নামে। পহেলা বৈশাখে পিঠা উৎসবের নামেও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে পার্সেন্টেজ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি লটারিতে কাজ পেলেও ঠিকাদারদের কাছ থেকেও এমপি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে ২ থেকে ৫ ভাগ পার্সেন্ট আদায় করেন বলে নোটিশে উল্লেখ রয়েছে। সরকারি খাল দখল করে নিজ বাড়ির সিনারা প্রাচীর নির্মাণ এবং আপন ভাই রিয়াজের মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে কারণ দর্শানো নোটিশে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম বলেন, তিনি কোন কারণ দর্শানোর নোটিশ পাননি। একজন এমপিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সম্পাদক কারণ দর্শাতে পারেন না। এখন নির্বাচনের আগমুহূর্তে এ ধরনের অভিযোগ করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স